সৌন্দর্য চর্চায় আজকাল সবাই অনেক সচেতন। বিশেষ করে নারীরা। সৌন্দর্য রক্ষায় তারা কত কিছুই না করে। ঠোঁট সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অঙ্গ। সুন্দর, নরম, গোলাপি ঠোঁট সবারই কাম্য। কালো ঠোঁট কেউই পছন্দ করে না। এজন্য অনেকেই ঠোঁটে লিপ গ্লোস বা লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকে নিয়মিত।
আজকে আমি আপনাদের সাথে ঠোঁট কেন কালো হয় এবং তা থেকে কীভাবে প্রতিকার পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো।
ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ:
ঠোঁট বিভিন্ন কারণে কালো হতে পারে এর মধ্যে কয়েকটি কারণ আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
১. অনেকের ঠোঁট বংশগত ভাবেই কালো হয়ে থাকে। এটা একটা জেনেটিক প্রব্লেম।
২. দীর্ঘ সময় রোদে থাকার কারণে সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মির কারণেও ঠোঁট ধীরে ধীরে কালো হয়ে যায়।
৩. অ্যালার্জি জনিত কারণেও অনেক সময় ঠোঁট কালো হয়ে যায়।
৪. হরমোনের কারণেও অনেকের ঠোঁটের রং কালো হয়ে থাকে।
৫. মাত্রাতিরিক্ত ধূমপানের প্রভাবে অনেকের ঠোঁট কালো হয়ে যায়।
৬. অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণেও অনেকের ঠোঁটের রং কালো হয়ে থাকে।
৭. যত্নের অভাবে ঠোঁটের রং কালো হয়ে যায়।
৮. অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণে বিশেষ করে শীতের সময় ঠোঁট কালো হয়ে যায়।
প্রতিকারের উপায়:
ঠোঁটের রং গোলাপি করার কিছু উপায় সম্পর্কে জানাব আশা করছি উপকৃত হবেন।
১. অতিরিক্ত রোদে বেশিক্ষণ যদি থাকতে হয় তবে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন। এতে করে আপনার ঠোঁটের উপর রোদ কম লাগবে।
২. ঠোঁটে সবসময় গ্লিসারিন বা ভ্যাসলিন লাগাবেন এতে করে ঠোঁট শুষ্ক কম হবে।
৩. ধূমপান ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার কম খাবেন।
৪. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন। পানি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পানি ঠোঁটের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।
৫. ঠোঁটের নিয়মিত যত্ন করবেন।
ঠোঁটের রং গোলাপি করার প্রাকৃতিক কিছু উপায়:
ঠোঁটের যত্নে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে যা ব্যবহার করলে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়ে ঠোঁট হবে গোলাপি, ও নরম। এসব উপাদান গুলো নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আর এতে কোন প্রকার ক্ষতি হয় না। নিচে এসব উপাদান গুলোর নাম ও ব্যবহার পদ্ধতি দেয়া হলো:
- লেবুর রস
- মধু
- অলিভ অয়েল
- দুধ
- চিনি
- টমেটো
- শসা
লেবুর রস:
লেবুর রস প্রাকৃতিক উপাদান ব্লিচিং হিসেবে পরিচিত। তাই এর রস ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এক টুকরো লেবু কেঁটে নিয়ে তা ঠোঁটে হালকা ভাবে ঘষুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে প্রতিদিন রাতে এই কাজটি করতে পারেন আর সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এটি আপনার ঠোঁটের মধ্যে গোলাপি আভা দিবে।
মধু:
আপনার ঠোঁট যদি বাহ্যিক কোন কারণে কালো হয়ে যায় তবে আপনি মধু ব্যবহার করুন। মধু ১০০% কার্যকর এক্ষেত্রে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মধু ঠোঁটে লাগান তারপর সকালে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ধীরে ধীরে কালচে ভাব দূর হবে আর আপনার ঠোঁট আরো বেশি সুন্দর হবে।
অলিভ অয়েল:
অলিভ অয়েল ব্যবহার করলেও ঠোঁট সুন্দর ও নরম হবে। এতে আছে বিভিন্ন রকম ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করলে আপনার ঠোঁট অনেক নরম ও গোলাপি হবে।
দুধ:
দুধে আছে প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটিক এসিড যা ঠোঁটের রং গোলাপি করতে সাহায্য করে। কিছুটা দুধ তুলোর সাহায্যে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ব্যবহারে দেখবেন যাদুর মত আপনার ঠোঁট গোলাপি হয়ে উঠবে।
চিনি:
চিনির সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস অথবা অলিভ ওয়েল মিশিয়ে ঠোঁটে কয়েক মিনিট স্ক্রাব করুন। দেখবেন ঠোঁট কতটা সুন্দর, মসৃণ ও গোলাপি হয়ে ওঠে। চিনিটা অবশ্যই লাল হতে হবে। সাদা চিনি ত্বকের জন্য ভালো না।
টমেটো:
টমেটো ঠোঁটের গোলাপি আভা বাড়ায়। প্রতিদিন এক টুকরো টমেটো নিয়ে অথবা টমেটোর পেস্ট করে ঠোঁটে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
শসা:
শসা ঠোঁটের কালোভাব খুব তাড়াতাড়ি দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে রোদে পোড়া ভাব দূর করতে শসার বিকল্প নেই। প্রতিদিন শসার রস ঠোঁটে লাগান কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন আর দেখুন ঠোঁট কতটা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
বিটরুট:
বিটরুট রস ঠোঁটের রং গোলাপি করে প্রাকৃতিক ভাবে। এর রস প্রতিদিন ঠোঁটে ব্যবহার করলে ঠোঁট অনেক গোলাপি আর মসৃণ হবে।
পরিশেষে
প্রতিদিন যদি নিয়ম মাফিক ঠোঁটের যত্ন করা যায় তাহলে অবশ্যই আপনার ঠোঁট ও হয়ে যাবে pink lips বা গোলাপি ঠোঁট। বাচ্চাদের ঠোঁটের মতো নরম ও গোলাপি হবে আপনার ঠোঁট আর আপনার হাসি হয়ে উঠবে সবার কাছে আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত।
আপনাদের মতামত অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে লিখতে ভুলবেন না।