জেনে নিন সুন্দর চোখের কিছু গোপন রহস্য

0
3299
beautiful eyes

Beautiful Eyes বা সুন্দর চোখের অধিকারী কে না হতে চায়।  ছেলে হোক কিংবা মেয়ে সবারই স্বপ্ন থাকে সুন্দর, আকর্ষণীয় চোখের।

মানুষের সৌন্দর্যের একটি অন্যতম প্রধান অংশ হলো চোখ।  বড় বড় মায়াবী চোখের চাহনি মন কারে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। পৃথিবীতে এমন অনেক প্রেমিক আছে যারা কেবল চোখের চাহনির প্রেমে পড়েছেন।  বড় বড় কবিরা চোখের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কতই না কবিতা লিখেছেন।

William Shakespeare এর ভাষায়,

Beauty is bought by judgement of the eye

Beautiful eyes বা সুন্দর, আকর্ষণীয় চোখ অনেকের সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত হয় আবার অনেকে নিজ ইচ্ছায় যত্নের মাধ্যমে করে তোলার চেষ্টা করে।  কিছু কিছু চর্চা ও যত্নের মাধ্যমে আপনিও করে তুলতে পারেন আপনার চোখকে সুন্দর, আকর্ষণীয়।  আসুন তাহলে আজকে আমরা জেনে নেই কীভাবে চোখকে করে তোলা যায় সুন্দর।

সুন্দর চোখের জন্য বিখ্যাত যারা

প্রথমেই আমরা কয়েকজন Most Beautiful Eyes এর অধিকারী মানুষের নাম জেনে নেই।

  • অ্যান্জেলিনা জোলি
  • ঐশ্বরিয়া রায় বচ্চন
  • আম্বার হার্ড
  • জিজি হাদিদ
  • মিলা কুনিস
  • আদ্রিয়ানা লিমা
  • দিপিকা পাড়ুকোন
  • এলিজাবেথ টেলর
  • ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
  • মেগান ফোক্স

চোখকে সুন্দর করার কৌশল

Beautiful Eyes বা সুন্দর চোখ যেমন সবারই কাম্য, সেভাবে তার সঠিক ভাবে যত্ন করাটাও  জানতে হবে। কিছু কিছু নিয়ম সঠিক ভাবে অনুসরণ করলে যে কারো চোখই হয়ে যাবে সবার কাছে আকর্ষণীয়। চোখ বড় হোক অথবা ছোট সঠিক জ্ঞান আর পরিচর্যায় হয়ে উঠতে পারে তা খুবই সুন্দর, সবার নজর কারাটা কোন ব্যাপার ই না তখন।

আসুন প্রথমেই জেনে নেই চোখকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার কিছু উপায়ের নাম। তারপর এদের সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবেও জানব।

  • চোখ সুন্দর করার ব্যায়াম।
  • চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় করার উপায়।
  • ভুরু ঘন করার উপায়।
  • চোখকে সুন্দর ও বড় দেখানোর জন্য মেকাপের ব্যবহার।
  • প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।
  • চোখের যত্ন।

তাহলে এবার এক এক করে সব গুলো পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক। আশা করি সবাই উপকৃত হবেন।

চোখ সুন্দর করার ব্যায়াম

চোখ সুন্দর করার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চোখের আকৃতি কিছু টা পরিবর্তন করা সম্ভব।

চোখের ম্যাসাজ

চোখের চারপাশে ম্যাসাজ করলে চোখের ভাজ, ফাইন-লাইন, রিংকেল কমিয়ে চোখকে টান টান ও সুন্দর করে তুলবে। নিয়মিত চোখের এই ম্যাসাজ অনেক উপকারী। চোখের ম্যাসাজ করলে চোখ অনেক আকর্ষণীয় লাগে। আর এর মাধ্যমে আপনার চোখ দেখলে সবাই বলবে beautiful eyes.

eye massage for beautiful eyes

নিয়ম

  • প্রথমে আপনার হাতের তর্জনী ভুরুর উপরের অংশে রাখুন।
  • এবার উপর থেকে চোখের নীচে পর্যন্ত ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ম্যাসাজ করুন।
  • এভাবে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন।
  • এবার আবার উল্টো দিক থেকেও একই ভাবে ম্যাসাজ করুন আরো ৫ মিনিট।
  • ব্যস এভাবে প্রতিদিন ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন।

চোখের ম্যাসাজ ২

এই ব্যায়াম করলে চোখের চারপাশের পেশি গুলো শক্ত হবে। এর ফলে চোখের ঝুলে পড়া ভাব ও ফোলা ফোলা ভাব কমে চোখ আকর্ষণীয় ও সুন্দর হয়ে ওঠে।

নিয়ম

  • আপনার তর্জনী আঙ্গুল একটু বাঁকা করে ভুরুর নিচের দিকে রাখুন।
  • এবার একটু একটু করে আস্তে আস্তে উপড়ে দিকে তুলুন। খেয়াল করুন ভুরু ও যাতে আস্তে আস্তে আস্তে উপড়ে উঠে।
  • এবার চোখ বন্ধ করুন।  চোখের যাতে প্রেসার পড়ে এমন ভাবে।
  • ১০-১৫ সেকেন্ড রাখুন চোখ খুলে ফেলুন।
  • এভাবে কয়েকবার করুন দিনে দুবার।

ফ্লারটি চোখের ব্যায়াম

ফ্লারটি চোখের ব্যায়াম করলে চোখ অনেক সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়। চোখের জাদুতে প্রিয়জনকে আকৃষ্ট করার জন্য এই ব্যায়ামের জুড়ি নেই।

নিয়ম

  • আপনার তর্জনী আঙ্গুল নাকের মাঝ বরাবর রেখে আস্তে আস্তে দুচোখের মাঝখানে আনুন।
  • এবার আপনার ঠোঁটকে O শেপের মত করুন। আপনার দুই ঠোঁটের দূরত্ব যেন যথাসম্ভব বেশি থাকে।
  • এবার আধা মিনিটের মত উপরের দিকে তাকান।
  • এবার চোখের পাতা বারবার খুলুন ও বন্ধ করুন।

চোখের ব্যায়াম ৪

এ ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার চোখ অনেক সুন্দর হবে। এ ব্যায়ামটি চোখের চারপাশের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে চোখকে টান টান ভাজ মুক্ত করে তোলে, সেই সাথে ডার্ক সার্কেল কমিয়ে চোখের ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।

নিয়ম

  • প্রথমে সামনের দিকে কোথাও সোজা তাকান। এমন জায়গায় তাকাবেন যাতে আপনার চোখ আরাম পায়।
  • এবার চোখের মণি ডান দিকে আনুন।এরপর আবার মাঝখানে এবং পর্যায় ক্রমে বামে, উপড়ে, নীচে, করতে থাকুন।
  • এভাবে কয়েক মিনিট করার পর ৫ মিনিট চোখ বুজে থাকুন।
  • আবার একই ভাবে করুন। শুধু চোখের মণিই ঘুড়াবেন।
  • এবার ভুরু টান টান রেখে চোখ বড় বড় করে খুলুন। জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিন।
  • এবার একটু শান্ত ভাবে বিশ্রাম নিন।

চোখের ব্যায়াম ৫

এই ব্যায়াম চোখের পাওয়ার বাড়ানোর সাথে সাথে চোখের আকার সুন্দর করে। চোখের মণি ও এর মাধ্যমে সোজা হয়।

নিয়ম:

  • হাতের তর্জনী আঙ্গুল নাকের মাঝ খান থেকে  দুচোখের মাঝ বরাবর আস্তে আস্তে নিয়ে যান।
  • এমন ভাবে নিবেদন যেতে আঙ্গুলের সাথে সাথে আপনার চোখের মণি দুই চোখের কোণায় চলে আসে।
  • এবার আবার আস্তে আস্তে উপড়ে দিকে সড়ান মণিও আঙ্গুলের সাথে সাথে উপড়ের দিকে সড়ে যাবে।
  • এভাবে কয়েক মিনিট করুন। 
  • একটু রিলাক্স হোন। দিনে দুই বার করবেন এই ব্যায়ামটি।

উপরের ব্যায়াম গুলো প্রত্যেকটি উপকারী। নিয়মিত করে দেখুন আপনার চোখ কতটা সুন্দর, আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এক কথায় Beautiful Eyes.

চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় করার উপায়

ঘন ও বড় চোখের পাপড়ি চোখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। যার চোখের পাপড়ি ঘন তার চোখ তত বেশি সুন্দর দেখায়। বড় ঘন পাপড়ি আছে এমন চোখ কার না ভালো লাগে। কিছু নিয়ম বা কিছু প্রসাধনী ব্যবহারে আপনার চোখের পাপড়ি ও বড়, ঘন কালো হতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছে না তাই তো!! একবার আমার কথায় বিশ্বাস করেই দেখুন আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। এবং নিজের চোখের প্রেমে নিজেই পড়বেন।

Thick eyelids for beautiful eyes

পাপড়ি আঁচড়ানো

আঁচড়ালে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে চুল ঘন হয়। ঠিক তেমনি ভাবে চোখের পাপড়ি আচড়ালে ও  পাপড়ি ঘন হয় যার ফলে আপনার চোখ খুব সুন্দর দেখায়।

নিয়ম

  • চোখের পাপড়ি আঁচড়ানোর জন্য এক ধরনের চিড়ুনি পাওয়া যায় অথবা মাশকারা ব্রাশ নিয়ে নিন।
  • এবার ব্রাশে ভিটামিন ই সামান্য পরিমাণ নিয়ে  চোখের পাপড়ি আচড়াতে থাকুন। ৫ মিনিট আচড়ান।
  • তারপর অপর চোখেও একই পদ্ধতিতে আচড়ান।
  • এভাবে প্রতিদিন ১০ মিনিট চোখের পাপড়ি আচড়ালে দেখবেন আপনার পাপড়ি কতটা ঘন হয়ে ওঠে।

পেট্রোলিয়াম জেলি

পেট্রোলিয়াম জেলি চোখের পাপড়ি নরম কোমল করে তোলে। এর ব্যবহারে রুক্ষ পাপড়ি নরম হবে ও চক চক করবে।

নিয়ম

  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি মাশকারা ব্রাশ নিয়ে নিন।
  • এবার পেট্রোলিয়াম জেলি ব্রাশে বেশি করে নিয়ে নিন।
  • এবার দুই চোখের পাপড়ি ভরে লাগান ।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো করে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার চোখের পাপড়ি ঘন ও কোমল হবে।

অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এর ব্যবহারে চোখের পাপড়ি ঘন ও সুন্দর হয়। নিয়মিত ব্যবহারে আপনি অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।

নিয়ম

  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি ব্রাশে বা হাতের আঙ্গুলে কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল নিয়ে নিন।
  • এবার দুচোখের পাপড়ি তে ভালো করে লাগান।
  • সারারাত রাখুন সকালে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারবেন।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেলের গুণের কথা জানে না এমন মানুষ খুব কম। চুল, ত্বক, পেটের পীড়ায় এর জুড়ি নেই। চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও এ জেল অনেক সহায়ক। এ জেল ব্যবহারে চোখের পাপড়ি ঘন, লম্বা ও স্বাস্থ্যবান হয়।

নিয়ম

  • অ্যালোভেরা জেল বের করে নিন।
  • এবার একটি মাশকারা ব্রাশ ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রাশে জেল নিয়ে দুই চোখের পাপড়ি তে লাগান।
  • ঘুমিয়ে পড়ুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

ডিম

ডিম সবচেয়ে সহজলভ্য একটা উপাদান। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও বায়োটিন। ডিম যেমনি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক তেমনিভাবে এটি চোখের পাপড়ি ঘন করে চোখকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ডিম নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার চোখের পাপড়ি প্রাকৃতিক ভাবে ঘন হবে।

নিয়ম

  • একটি ডিম নিন।
  • এতে গ্লিসারিন অথবা পেট্রোলিয়াম জেলি মিশিয়ে নিন।
  • এবার ব্রাশে করে বা হাতের আঙ্গুলে নিয়ে চোখের পাপড়িতে লাগান।
  • ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • সপ্তাহে ৩ বার ৪-৫ মাস ব্যবহার করে দেখুন চোখের পাপড়ি কতটা ঘন হয়ে ওঠে।

পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা

পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে চোখের পাপড়ি নষ্ট হয় না উল্টো পাপড়ি ভালো, স্বাস্থ্যবান, সুন্দর থাকে। সবসময় চোখের পাপড়ি পরিস্কার রাখার চেষ্টা করবেন। চোখের মাশকারা কাজল ভালো করে পরিষ্কার করুন।

নিয়ম

  • পরিস্কার পানি দিয়ে মুখ, চোখ ধুয়ে নিন।
  • ভালো করে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছুন।
  • এভাবে দৈনিক ৩-৪ বার পরিস্কার করবেন।

উপরের সবকটি উপাদান চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় করার জন্য কার্যকরী। নিয়মিত ব্যবহার করে দেখুন চোখের পাপড়ি কতটা ঘন হয়ে ওঠে আর আপনার চোখ দেখে লোকে বলবে “Beautiful Eyes you have”.

ভুরু ঘন করার উপায়

thik eyebrows for beautiful eyes

ভুরু ঘন হলে চোখ দেখতে অনেক সুন্দর দেখায়। চোখের সৌন্দর্যের একটা প্রধান অংশ হলো আপনার ভুরু। মোটা, ঘন, কালো ভুরু চোখের সৌন্দর্য অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। ভুরু মোটা হলে চোখ অনেক আকর্ষণীয় লাগে। এক কথায় ভুরু চোখকে হাইলাইট করে। এজন্য অবশ্যই ভুরুর এক্সট্রা যত্ন নিতে হবে। আজকে আমরা কীভাবে ভুরুর যত্ন নেওয়া যায় তা আলোচনা করব।

ক্যাষ্টর অয়েল

ক্যাষ্টর অয়েলের ব্যবহার ভুরু মোটা করতে সাহায্য করে। এ তেলে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা অন্য কোন তেলে নেই। এজন্য এ তেলের ব্যবহার প্রাকৃতিক ভাবে ভুরু ঘন ও কালো করে তোলে।

নিয়ম

  • অল্প পরিমাণে ক্যাষ্টর অয়েল হাতের আঙ্গুলে নিয়ে নিন।
  • এবার তা আপনার ভুরুতে লাগান ও আলতো করে ম্যাসাজ করুন।
  • ২০-৩০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ভুরু ঘন হবে।

পেঁয়াজের রস

পেঁয়াজের রসে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস। যার ফলে চুলের খুব দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। প্রতিদিন এর ব্যবহারে আপনার ভুরু ঘন হবে।

নিয়ম

  • পেঁয়াজ ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • এবার পেঁয়াজের রস তৈরি করে নিন।
  • আঙ্গুলের সাহায্যে ভুরু তে পেঁয়াজের রস লাগাল।
  • কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ভুরু ঘন ও কালো হবে।

ভুরু আচড়ানো

চুল নিয়ম করে আচড়ালে যেমন বাড়ে ভুরু ও ঠিক তেমনি ভাবে বাড়ে। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন ভুরু আচড়ান।

নিয়ম

  • একটা চিড়ুনি বা ব্রাশ নিয়ে নিন।
  • এবার ভুরু আচড়ান ভালো করে।
  • এভাবে প্রতিদিন ভুরু আচড়ান দেখবেন আপনার ভুরু কতটা ঘন হয়ে ওঠে আর আপনার চোখ হয়ে উঠে অনেক সুন্দর।

ডিমের সাদা অংশ

ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। ডিম যেকোনো জিনিস বৃদ্ধিতে সহায়ক। ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধি হয়। অবশ্যই ডিমের সাদা অংশ ভুরু তে লাগালে উপকার পাবেন।

নিয়ম

  • একটি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে নিন।
  • এবার আঙ্গুলের সাহায্যে দুই ভুরু তে লাগান ভালো করে।
  • ২০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ভুরু ঘন হবে।

লেবুর রস

লেবুর রস ভুরুর বৃদ্ধি ঘটায়। লেবুর রসের উপাদান ভুরু বৃদ্ধির সাথে সাথে ভুরু কে সুন্দর ও করে তোলে। লেবুর রস প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ভুরু কতটা ঘন ও সুন্দর হয় তা নিজে না করলে বিশ্বাস করবেন না।

নিয়ম

  • একটা পরিস্কার পাত্রে লেবুর রস নিয়ে নিন।
  • এবার দুই ভুরু তে লাগান।
  • 20 মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • চাইলে লেবু খোসা সহ ভুরু তে ঘষে ঘষে লাগাতে পারেন।
  • নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে আপনার ভুরু ঘন হবে।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল রূপচর্চায় অনেক কার্যকরী। এর জেল ভুরু বৃদ্ধিতে ও ভূমিকা পালন করে। অ্যালোভেরা জেলের বিভিন্ন উপাদান ভুরু ঘন করতে সাহায্য করবে।

নিয়ম

  • অ্যালোভেরা জেল বের করে নিন।
  • এবার দুই ভুরু তে লাগান।
  • ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
  • তারপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

ভুরু ঘন করতে হলে অবশ্যই উপরের পদ্ধতি গুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন। আশা করছি উপকৃত হবেন।

চোখকে সুন্দর ও বড় দেখানোর জন্য মেকাপের ব্যবহার

Beautiful Eyes পেতে হলে আপনি মেকাপের ও সাহায্য নিতে পারেন। টিভি তে অভিনয় করা নায়িকা অথবা মডেলদের চোখ দেখবেন কতটা Attractive. তাদের আকর্ষণীয় চোখের রহস্যের মধ্যে মেকাপ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো মানের মেকাপের সাহায্যে খুব সহজেই সুন্দর মায়াবী চোখ বানানো সম্ভব। এ জন্যে অবশ্যই মেকাপ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আর চোখের মেকাপের ক্ষেত্রে আরো বেশি ধারণা নিতে হবে যেহেতু চোখ একটা সেনসিটিভ অংশ। আজকে আমরা মেকাপ সম্পর্কে কিছু ধারণা নিব আর কীভাবে মেকাপের ব্যবহারের ফলে চোখ সুন্দর দেখাবে তা স্টেপ বাই স্টেপ জানব।

big and beautiful eyes

আরও পড়ুনঃ প্রাণহীন রুক্ষ চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করুন

ডার্ক সার্কেল রিমোভ

চোখের মেকাপের জন্য প্রথমেই ডার্ক সার্কেল রিমোভ করাটা জরুরি। ডার্ক সার্কেল চোখের সৌন্দর্য নষ্ট করে। আমাদের সবারই কম বেশি চোখের নিচে কালো দাগ থাকে। এজন্য মুখ ধুয়ে মেকাপ প্রাইমার ভালো করে পুরো মুখে ও চোখের নীচে লাগান। আপনি চাইলে আন্ডার আই ক্রিম বা কনসিলার ও ব্যবহার করতে পারবেন। এর ফলে চোখের কালো দাগ বুঝা যাবে না।

আইশ্যাডো

চোখের কালো দাগ দূর করার পর চোখের মানানসই আইশ্যাডো লাগাতে হবে। চোখের পাতার উপরের মাঝামাঝি অংশ থেকে চোখের কোণায় ভিতরে অংশে হালকা রংয়ের শ্যাডো লাগালে চোখ বড় ও সতেজ লাগে। তারপর আপনি ড্রেসের কালার অনুযায়ী শ্যাডো লাগিয়ে নিবেন আর ভালো করে ব্ল্যান্ড করে নিবেন। যত ভালো করে মেশাবেন চোখ দেখতে ততই ভালো লাগবে আর আকর্ষণীয় দেখাবে।

আইলাইনার

এবার আইলাইনার দেয়ার পালা। চোখের উপড়ের অংশে আইলাইনার ও নিচে কাজল লাগান। আইলাইনার চোখের কোণায় একটু বাড়িয়ে আঁকবেন যাতে করে চোখটা বড় দেখায়। এবার চোখের নীচে হালকা করে কাজল লাগিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেল এবার নিজেই দেখুন আপনার চোখ কতটা সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাগছে।

মাশকারা

এবার চোখের পাপড়ির পালা। চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় দেখানোর জন্য মাশকারা লাগিয়ে নিন। চাইলে আলগা বা নকল আইল্যাশ লাগিয়ে তার উপর মাশকারা লাগিয়ে নিতে পারেন। চোখ তাহলে অনেক বেশি বড় ও টানা টানা লাগবে।

ভুরু শেপ ঠিক নিন

ভুরুর শেপ টা ঠিক করা অনেক বেশি জরুরি। ভুরু সুন্দর করে শেপ করে নিতে হবে। পাতলা ভুরু হলে ভুরু টা ভালো করে এঁকে নিন। এমন ভাবে আঁকবেন যাতে করে ভুরু টা ন্যাচারাল লাগে। আইপেনসিল দিয়ে ভুরু টা এঁকে নিবেন।

ফিনিসিং

চোখের মেকাপ যাতে ছড়িয়ে না যায় সেজন্য চোখের নিচে হালকা ফেস পাউডার লাগিয়ে নিন। এতে করে কাজল ছড়িয়ে যাবে না।

উপরের স্টেপ গুলো ফলো করে দেখুন আর চোখের সৌন্দর্যে সবাইকে মুগ্ধ করে দিন। 

প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার

চোখের যত্নে বা চোখকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় রাখতে অবশ্যই কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে আপনার চোখ ন্যাচারাল ভাবে সুন্দর দেখাবে আর কোন ক্ষতি ও হবে না। আসুন জেনে নেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের নাম ও ব্যবহার সম্পর্কে।

আলুর ব্যবহার

আলু চোখের কালো দাগ দূর করার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। এটি চোখের কালো দাগের পাশাপাশি চোখের ভাজ ও দূর করে থাকে।

নিয়ম

  • একটা আলু ভালো করে ধুয়ে পাতলা করে গোল করে কেঁটে নিন।
  • এবার একটা জায়গায় রিলাক্স ভাবে শুয়ে নিন।
  • এবার টুকরো দুটি চোখের উপর রেখে চোখ বন্ধ করে থাকুন।
  • ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন এতে করে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে।

শসার ব্যবহার

চোখের যত্নের শসা অনেক উপকারী। শাসায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ। এর ফলে এটি চোখের সৌন্দর্য সাথে সাথে চোখকে ভালো ও রাখে।

নিয়ম

  • শসার টুকরো নিয়ে নিন।
  • এবার তা চোখের উপরে রাখুন। চোখ বন্ধ করে থাকুন।
  • চাইলে শসার রস তুলোর সাহায্যে লাগাতে পারেন।
  • কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার চোখের নিচে কালো দাগ কমে যাবে।

বরফ

বরফ চোখের ক্লান্তি ভাব ও ফোলা ভাব কমিয়ে চোখকে অনেক সুন্দর করে তোলে। বরফ ব্যবহারে আপনার চোখের উপকার হয়।

নিয়ম

  • একটি গ্লাসে বরফ কুচি নিয়ে নিন।
  • এবার একটা পরিস্কার স্টিলের চামচ সেখানে চুবিয়ে ঠান্ডা করে নিন।
  • ঠান্ডা চামচ টি চোখে চেপে চেপে চোখে লাগান।
  • চামচ গরম হয়ে আসলে আবার বরফে চুবিয়ে ঠান্ডা করে নিন।
  • এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ভালো ফল পাবেন। চোখের ফোলা ভাব কমে যাবে।

চোখের যত্ন

এবার চোখের উপর দিয়ে এত কিছু করার পর আপনার সুন্দর দুটি চোখের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য কিছু যত্ন বা চর্চার কথা জেনে নেওয়া যাক। চোখ অনেক টা সেনসিটিভ তাই চোখের আলাদা যত্ন অবশ্যই জরুরি। চোখের নিয়মিত যত্ন না নিলে চোখের বিশাল ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

  • মেকাপের পর ভালো কোন তেলের সাহায্যে চোখের মেকাপ টা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর পরিস্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
  • চোখের পাপড়ি বা ভুরু তে কোন কিছু ব্যবহার করলে অবশ্যই তা কুসুম গরম পানিতে ধোয়ার চেষ্টা করবেন।
  • রাতে বেশি দেরি তে ঘুমাবেন না। দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।
  • বেশি রোদে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। চেষ্টা করবেন কড়া রোদে না যেতে।
  • নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। সবুজ শাকসবজি, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, কচু শাক ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খাবেন। 
  • কম্পিউটার, মোবাইল বেশি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু টা বিশ্রাম নিবেন। কাজের ফাঁকে খানিকটা চোখ বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করবেন।
  • সুযোগ পেলে চোখে পানির ঝাপটা দিন। একটু পর পর ঠান্ডা পানির ঝাপটা চোখের ভিতর দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে চোখ আরাম পাবে।
  • চোখের ব্যায়াম করলে চোখের উপকার হয় তাই ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন চোখের ব্যায়াম চোখের জ্যোতি বাড়ায়।
  • মাঝে মাঝে চোখের পলক বার বার খুলুন আবার বন্ধ করুন। এটা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • চোখ সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন।
  • ভুরুর নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। চুলের যত্নের সাথে সাথে ভুরুর যত্ন ও নিতে হবে।

পরিশেষে

সুন্দর চোখ কে না চায়। সবারই স্বপ্ন থাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় চোখের। সেজন্য অবশ্যই চেষ্টা করবেন চোখের যত্ন নিতে। চোখের যত্নের অবশ্যই আমার বলা কথা গুলো মনে রাখবেন এবং মেনে চলার চেষ্টা করবেন। তাহলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবেন।

আর হ্যাঁ যত্ন এক দুই দিনের ব্যাপার না প্রতিদিনের ব্যাপার। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন চোখের, ত্বকের ও চুলের যত্ন নিতে হবে।

আপনাদের মতামত অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে লিখতে ভুলবেন না। আশা করছি আমি আমার কথাগুলো দিয়ে একটু হলেও আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি